তুমি রাজছত্র ত্রিবেদী সুমিত্রা মহাকাল অগ্নি স্ফুলিঙ্গ বিমনা ডাহুকী।
তুমি আশ্বিনের ঘন নীল আশ্চর্য আকাশে মেঘরাশিদের বিদ্যুৎ কম্পন,
তুমি মনোরমা কপোতবধূ, তুমি কীর্তিনাশা নটীরা সম্রাজ্ঞী।
স্বমিহমায় অন্তর্লীলায় মগ্ন তোমারে বুঝিবার আস্পর্ধা করিতে সকল জীবনিকা গহীন অন্তে অস্তিত্বহীন হইয়া পড়ে।
অভেদ্য এ মহাজাতক দেবাত্মা জ্যোতির্দেশি রাজ্যে তলিয়ে যাওয়া নিষ্প্রাণ অতি নগন্য এক জীবসত্তা ক্ষুদ্রাংশ ফোর্ট ব্যাঙ্কার আমি।
সময় গতির শব্দময়তাকে রক্তস্রোতের নির্বাসনে রেখে নিষ্কাম কামনা বাসনার মোক্ষ লাভে ছুটিয়া চলি অবিরাম।
স্রোতের পুষ্পক গলে পড়িয়া ভাঙ্গাগড়ার ছলনার ছোবল হজম করিয়া ভাটির টানে ভাসিয়া ভাসিয়া চলি ঘুণেধরা অন্তঃসারশূন্যতার কাঠের ফালির ন্যায়।
ওগো বারুণী প্রাণ, সপ্তরঙীন তোমার রঙীন ঘাটে ভিড়িবার নাহি আছে সামর্থ্য নাহি আছে কাক চক্ষু জলের কণিকা বিন্দু ভেদ করিয়া তোমার রাঙা চরণ স্পর্শ করিবার দুঃসাহস।
তোমার স্ফটিকস্তম্ভের উজ্জ্বল প্রাণনে বিমোহিত হইয়া আকাঙ্খার উলঙ্গ উল্লাসে ডুবে যাই ধীরে ধীরে তিমিরের খেয়া।
তোমার অস্পষ্ট আকাশে স্বপনের ডানা ছিড়ে ক্ষুধা হয়ে ব্যাথা দেয় একুশরত্নের প্রাণের মমতা।
দিবারাত্রির জোয়ার স্রোতে বল্গাহারা মরুঝড়ের হাহাকারে তোমার ঘাটশিলায় নোঙরছেঁড়া হৃদয় বাঁধিবার ব্যর্থ প্রচেষ্টা।
বেদনার গন্ধ পিষে দিয়ে গাঢ় বিষের নীল আত্মসাৎ করিয়া দাহ করিয়াছি বিরহীর সকল ছায়াপুত্তলিকা।
শতাব্দী তীক্ষ্ণ হয়ে পড়লে হেমন্তের ডুবে যাওয়া জ্যোৎস্নায় রজনীর শেষ প্রহরে আচঁল পেতে দিও তোমার ভরা শস্যের প্রান্তরে।
লেখক। পঙ্কজ কুমার দাস
সমাজকর্মী।