রিমন মুক্তাদির।। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়োগে কাফালা প্রথা বাতিল করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। দেশটির নাগরিকরা এই প্রথার অপব্যবহার করার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর), দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় এক ঘোষণার মাধ্যমে এই তথ্য জানায়।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নাগরিকেরা কাফালা বা স্পন্সরশিপের মাধ্যমে প্রবাসীদের কাজের ভিসা ও অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিতে পারে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভিসাদাতা কফিলরা নিজেদের স্বার্থে প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর নানা শোষণ-নির্যাতন চালায়। আর এই কারণে দ্রুত এই প্রথা বাতিল করা হচ্ছে।
দেশটির শ্রম এবং মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী সপ্তাহে কাফালা ও কফিল প্রথা বাতিলের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হবে। ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসের মধ্যেই তা কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
২০১৮ সালের ১৪ মে এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের মন্ত্রিসভায় গৃহীত হয়। আর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ প্রায় ১০ মিলিয়নের বেশি প্রবাসী এর সুফল পাবেন।
কাফালা প্রথা হচ্ছে সৌদির কোনো নাগরিকের অধীনে থেকে তার নামে কাজ করা, ব্যবসা করা। এর বিনিময়ে ওই সৌদি নাগরিক মাসে মাসে একটা লভ্যাংশ নেয় প্রবাসীর কাছ থেকে।
এই প্রথা বাতিল হলে প্রবাসীরা সরাসরি দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবেন। আর মন্ত্রণালয়ই হবে প্রবাসীদের অভিভাবক। ফলে অর্থ লোপাটসহ প্রবাসীদের অবৈধ হবার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসবে।
এই কাফালা প্রথার কারণে কফিল বা নিয়োগকর্তা প্রবাসীদের ওপর নানাভাবে শোষণ করে থাকে। এসব অত্যাচার-নির্যাতনের কোনো সুবিচার পাওয়া যায় না। এর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অবস্থার শিকার হন গৃহস্থালি কাজে নিযুক্ত অভিবাসীরা।
এছাড়াও প্রবাসীরা সব সময় ভয়ে থাকেন যে, কখন জানি কফিল অন্যায়ভাবে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। অথবা নিজেই ব্যবসার দখল নিয়ে নেয়। কারণ দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব কিছু কফিলের নামে থাকে। ফলে এ ঘটনায় আইনি সহায়তাও পাওয়া যায় না।
তবে সৌদি সরকারে নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশীসহ অন্য দেশের প্রবাসীরা এই নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। আর স্বাধীনভাবে দেশটিতে ব্যবসা বা চাকরি করতে পাবে।
অনলাইন।