শুহিনুর খাদেম।। আজ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরাও এই উৎসবটি পালন করে থাকেন।
তবে কেন ২৫ ডিসেম্বরই বড়দিনের উৎসব পালন করা হয়, তার রয়েছে বিস্তার এক ইতিহাস।
বর্তমান ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে যিশুর জন্ম হয়। তার মায়ের নাম মেরি এবং বাবা জোসেফ। গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার তখন ছিলো না। এমনকি বাইবেলেও সুনির্দিষ্ট করে যিশুর জন্মের দিন-তারিখ উল্লেখ নেই। তাই রোমের প্রথম খ্রিস্টান রাজা কনস্ট্যানটাইন ২৫ ডিসেম্বর যিশুর জন্মদিন হিসেবে পালন করার প্রথম নির্দেশ দেন। এর কয়েক বছর পরে পোপ জুলিয়াস মেনে নেন কনস্ট্যানটাইনের বিধান। এরপর থেকেই ২৪ ডিসেম্বর ক্রিসমাস ইভ, ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস এবং ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে হিসেবে পালন করা হয়।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নিকট এই দিনটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ঈশ্বর তার পুত্রকে যিশুকে এই দিন পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য, মানবতাকে উদ্ধার করার জন্য এবং পাপমুক্ত করার জন্য। বিশ্বজুড়ে এই দিনটি একইসঙ্গে ধর্মীয় ছুটি এবং বাণিজ্যিক অনুষ্ঠান হিসেবে পালন করা হয়।
বলা হয়ে থাকে, যিশুর জন্মের বহু আগে মূলত ঠান্ডার সময় রাত দীর্ঘ হওয়ার কারণে মানুষ আলোর জন্য উৎসুক থাকতো। ঠান্ডার কাটাতে কাটাতে সূর্যের জন্য একপ্রকার প্রার্থনা করা হতো।
প্রচলিত বিশ্বাস মতে, খ্রিষ্টধর্মের প্রথমদিকের বছরগুলোতে ক্রিসমাস বা বড়দিন নয়, ইস্টার ছিলো প্রধান ছুটির দিন। পরে চতুর্থ শতাব্দীর সময় গির্জা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন- শীতকালীন উৎসবের পাশাপাশি যিশুর জন্মকে একটি ছুটির দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তখন থেকে তিনটি এই ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয়ে আসছে।
আবার অনেকের ধারণা, যিশু ডিসেম্বর মাসে নয়, অক্টোবরে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পেগান চার্চ (আদি চার্চ) মনে করেন, রোমের মানুষেরা ২৫ ডিসেম্বর সূর্য দেবতাকে আরধনা করতেন। ঠান্ডায় জমে যাওয়া ডিসেম্বরে সূর্যের আলো চেয়ে প্রার্থনা করা হতো। কিন্তু পরে খ্রিষ্টধর্মের প্রচার বাড়ায় অন্য ধর্মের মানুষেরা যখন আকৃষ্ট হলেন, তখন থেকেই এই দিনটি যিশুর জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
অনলাইন।