শুহিনুর খাদেম।। এবার পুরুষদের জন্যও জন্মবিরতিকরণ পিল ও জেল তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু দম্পতির মধ্যে এই জেলটির পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। খবর মেইল অনলাইন।
জানা যায়, পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন এবং সেজেস্টেরোন এসিটেটের সংমিশ্রণে এই জেলটি তৈরি করা হয়েছে। নেস্টোরন যার বাণিজ্যিক নাম। নেস্টোরন টেস্টিসে শুক্রাণুর উৎপাদন এমন প্রক্রিয়াতে কমাবে, যা পুরুষের লিবিডোকে (যৌনক্রিয়া) প্রভাবিত না করেই শুক্রাণুর উৎপাদন কার্যকরভাবে প্রতিহত করবে।
গবেষণা দলের অধ্যাপক রিচার্ড এন্ডারসন জানান, পাঁচজোড়া দম্পতির ওপর এই পরীক্ষাটি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। যারা গত এক বছর ধরে কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই জন্মবিরতিকরণ জেল ব্যবহার করে আসছেন। তবে এ ব্যাপারে পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিতে আরো তিন বছর সময় লাগতে পারে। সমীক্ষার লক্ষ্য ৪৫০ জোড়া দম্পতি তাদের প্রধান জন্মবিরতিকরণের জন্য এই জেল গ্রহণ করবেন।
লস এঞ্জেলস বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষক ড. ক্রিস্টিনা ওয়াং, যিনি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এই জেলের পরীক্ষামূলক ব্যবহার পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে ড. ক্রিস্টিনা ওয়াং বলেন, পুরুষ জন্মবিরতিকরণ ওষুধ প্রয়োগের তিনটি সুপ্ত পদ্ধতি রয়েছে- পিল হিসেবে, জেলের সাথে মিশিয়ে এবং মাসিক ভিত্তিতে ইঞ্জেকশান প্রয়োগের মাধ্যমে। এই তিনটিরই আলাদা আলাদা সুবিধা আছে।
এদিকে পুরুষদের জন্য তৈরি করা সম্ভব্য পিল নিয়ে ভীষণ আশাবাদী শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির এন্ড্রলজির অধ্যাপক এলান পেসি। তিনি বলেন, এই পিলের ব্যবহার নিয়ে পুরুষদের প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।
অধ্যাপক এলান পেসি আরো জানান, তবে নিয়ম করে গর্ভনিরোধক পিলের সরবরাহ করা তার কাছে খানিকটা অযৌক্তিক মনে করেন।
এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ একটি ট্রায়াল পরিচালনা করছে। যা অনেকটাই প্রতিবর্তনযোগ্য বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচার। এটি একপ্রকার শুক্রাণু নিরোধক ইনজেকশান, যা ১৩ বছর পর্যন্ত গর্ভাবস্থা প্রতিরোধ করবে। এ পর্যন্ত ৩০০ অধিক পুরুষের ওপর এ ইনজেকশান প্রয়োগ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’র এই গবেষণার প্রধান ডা. রাধে শ্যাম শর্মা জানান, আমাদের প্রক্রিয়াতে গর্ভনিরোধ সফলতার হার শতকরা ৯৭.৩ ভাগ। এটি পুরোপুরি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অনলাইন।